বয়স্ক ভাতা পাওয়া আলেয়া বেগমদের অধিকার
রাজশাহী থেকে আয়েশা তাবাস্সুম
‘আমার চলবে কি করে জীবনযুদ্ধে শরীরটা যেন আর সাথ দেয় না।’ এই কথাগুলো রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার এক প্রবীণ নারী আলেয়া বেগমের (৬৭)। জীবনের অনেক সময় পার করে বয়সের ভারে তিনি আজ বৃদ্ধ। জীবনের অনেক ঘাত প্রতিঘাত সামলিয়েছেন। স্বামী আর সন্তানদেরকে নিয়ে মোকাবিলা করেছেন জীবনের নানান সমস্যা। তিনি এখন বিশ্রাম নিতে চান। তিনি আশা করছেন সরকার তাঁদের পাশে থাকবে, বয়স্ক ভাতা দেবে। কারণ এটা তাদের অধিকার।
আলেয়া বেগম তিন সন্তানের জননী। তাঁর ২ ছেলে ১ মেয়ে। ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। কিন্তু সন্তানরা তার দায়িত্ব নিতে নারাজ। সবার আলাদা সংসার। সংসারের যাঁতাকলে তার সন্তানরা এতটা ব্যস্ত যে বৃদ্ধ মা বাবার খোঁজ নেয়ার সময়টুকু হয়না। তাঁর স্বামীর বয়স প্রায় ১০৫ বছর। বয়সের ভারে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। তাই তো তিনি আর উপার্জন করতে পারছেন না। ভিক্ষাবৃত্তি করে নিজের এবং স্বামীর খাওয়া আর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন আলেয়া বেগম।
একদিন ভিক্ষা করতে না পারলে তাদের খাবার জোটেনা। সরকারি কোন ভাতাও তারা পান না। অনেকবার ভাতার জন্য প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। এই বৃদ্ধ বয়সেও তারা বয়স্ক ভাতা পান না। জীবনের শুরু থেকেও আজও অবধি তাদেরকে খাবারের জন্য সংগ্রাম করতে হয়। সরকারসহ বিত্তবানরা ইচ্ছা করলে এ বৃদ্ধ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে। বাড়াতে পারে সহযোগিতার হাত। এছাড়া বয়স্ক ভাতা পাওয়া তাদের একটি নাগরিক অধিকার। জীবনের শেষ প্রান্তে, বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই বৃদ্ধা স্বপ্ন দেখেন একটু বিশ্রামের। নিতে চান একটু শান্তির নিঃশ্বাস। আসুন আমরা এ প্রবীণদের পাশে দাঁড়াই। সরকার ও প্রশাসনের সাথে তাদের যোগাযোগ করিয়ে দিই যাতে করে তারা সরকারি প্রদত্ত ভাতাগুলো লাভ করতে পারেন।