পথের ধারে নজরজুড়ে পুষ্টি কানন
সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে গাজী আল ইমরান
সাধারণত কৃষকের মাঠ জুড়ে বা বাড়ির আঙিনায় সবজি বাগান দেখা গেলেও একটি ভিন্ন চিত্র চোখে পড়েছে শ্যামনগর উপজেলার বংশিপুর থেকে মুন্সিগঞ্জ রাস্তার পাশ দিয়ে। বিগত বছরগুলোতে স্বল্প পরিসরে চোখে পড়লেও তা আজ ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। রাস্তার পাশ দিয়ে যতদূর নজর যায় চোখে মেলে পুষ্টি বাগান। আর এই বাগানে রয়েছে হরেক রকমের সবজি। গবাদি পশু থেকে রক্ষা পেতে ঘিরে দেওয়া হয়েছে সবজি বাগানের চারপাশ।
রাস্তার পাশে পুষ্টি কানন পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কৃষক। সাধারণত রাস্তার পাশে জায়গাগুলো পতিত অবস্থায় বা অবৈধ স্থাপনায় ভরে থাকে। কিন্তু বর্তমান সময়ে রাস্তার পাশের এই চিত্র কিছু মানুষের জন্য আশার আলো সঞ্চার করেছে।
রাস্তার পাশে পথচারীদের চোখে পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির সবজি। গাছে গাছে ঝুলছে লাউ, চাল কুমড়া,মিষ্টি কুমড়া। এছাড়াও রয়েছে সিম, তুরুল, ঝিঙে, ঢেড়স, কুশি বিভিন্ন ধরনের শাক। বিভিন্ন ধরনের মসলা জাতীয় খাদ্যের চাষাবাদ রয়েছে চোখে পড়ার মতো। রাস্তার পাশে হলুদ, আদা, ঝালসহ বিভিন্ন প্রজাতির মসলার চাষে পিছিয়ে নেই চাষীরা। এ থেকে যেমন পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মিটছে একই সাথে বিক্রয়ের মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে তারা।
সাধারণত রাস্তার পাশের জায়গাগুলো পতিত এবং দখলের মধ্যে থেকে যায়। কিন্ত বংশিপুর-মুন্সিগঞ্জ রাস্তার পাশে ফুটে উঠেছে একেবারেই ভিন্ন চিত্র। অধিকাংশ বাড়ির সানেই রয়েছে নেট দিয়ে ঘেওে সবজি বাগান, পরিচর্যা করছে বাড়ির নারী পুরুষ উভয় মিলে।
সকালেই উঠেই সতেজ সবজি নিজের পরিবারের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে, এরপর অতিরিক্তি অংশ বিক্রি হচ্ছে বাজারে। অনেকেই বাজার পর্যন্ত যাওয়ার আগেই বাড়ি থেকেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি।
এলাকার অনেকের বাড়িতে নিজের বসতভিটা ছাড়া কোন জায়গা না থাকায় সবজি বাগান বা নিজের বাড়ি থেকে পুষ্টি উৎপাদনের কোনো উপায় ছিলো না। তাদের অনেকেই এখন পুষ্টির ফেরিওয়ালা।
পতিত স্থানে পুষ্টি কানন তৈরি করা কৃষক রাশিদুল ইসলাম এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বাড়িতে জায়গা কম থাকায় বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে সবজি বাগান তৈরির সিদ্ধান্ত নেই। প্রথমে দিধাদ›েদ্বর মধ্যে থাকলেও পরে ভালো পরিমাণ সবজি পেয়েছি। আমরা চাই সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ এবং নিরাপদ সবজি বীজের উৎস।’
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এনামুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার ধারে সবজি বাগান এলাকার পুষ্টি যোগানে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। আমরা সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাদের এই ধারা অব্যাহত রাখতে ভূমিকা রাখতে পারি। আমরা সরকারিভাবে তাদের বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে তাদের এই কাজকে আরো বেশি বেগবান করার চেষ্টা করবো।’