কবি নজরুলের চেতনায় তৈরি হোক বৈষম্যহীন সমাজ
মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান ও বিমল চন্দ্র রায়
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মজয়ন্তিী উপলক্ষে মানিকগঞ্জ স্যাক কার্যালয়ে আলোচনা সভা, কবিতা আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি। গ্রামীণ শিল্পী সংস্থা মানিকগঞ্জ ও বারসিক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
বারসিক মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল চন্দ্র রায়ের সঞ্চালনায় উদীচি মানিকগঞ্জের সাবেক সভাপতি নারী নেত্রী শ্রীমতি লক্ষী চ্যাট্যার্জির সভাপতিত্বে নজরুলের কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা ও আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক অ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সপ্তসুর সঙ্গীত নিকেতনের পরিচালক ও বিশিষ্ট আবৃত্তিকার অধ্যাপক বাসুদেব সাহা, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি মানিকগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মাষ্টার, কবি আলিনূর রহমান, সাহিত্য অনুরাগী ভজন কৃষ্ণ বনিক ও মোঃ নজরুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন বারসিক কর্মকর্তা নিতাই চন্দ্র দাস,গাজী শাহাদাত হোসেন বাদল, ঋৃতু রবিদাস প্রমুখ।
এছাড়াও মিউজিক টাচ এন্ড রিলেশন এর সহযোগিতায় নজরুলের কর্মময় জীবন ও রচিত গান নিয়ে মনোজ্ঞ সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন নজরুল সংগীত শিল্পী বিনিতা চৌধুরী, শিল্পী মুক্তার হোসেন, গ্রামীণ শিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নজরুল সঙ্গীত শিল্পী মোঃ ইউসুফ আলী, শিল্পী চন্দন দাশ, সপ্তসুর সঙ্গীত নিকেতনের সঙ্গীত পরিচালক মোঃ কাউছার আহমেদ তবলা তীর্থ পরিচালক ওস্তাদ শ্যামল কর্মকার ও মিউজিক টাচ এন্ড রিলেশন সভাপতি ইব্রাহিম লাভলু ।
সভাপতি শ্রীমতি লক্ষী চ্যাট্যার্জি বলেন, ‘কবি নজরুল ছিলেন প্রগতিশীলতা ও মানবতার কবি। বাঙালির নিজস্ব জাতিসত্তা বিকাশের ক্ষেত্রে এই প্রবাদ পুরুষ ছিলেন শক্তির প্রধান উৎস। বাংলা সাহিত্যে তার সৃষ্টিকর্ম অনন্য ভাস্বর। তার রচিত সাহিত্যে চিন্তার প্রতিফলন আমাদের সাহস যোগায়।কবি নজরুলে চেতনা আমাদেরকে জাতী ধর্ম বৈষম্য মানব মুক্তি ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের প্রেরণা দেয়।’
মজিবর রহমান মাষ্টার বলেন, ‘নজরুল তাঁর লেখনীতে যে সাম্যের বার্তা দিয়েছেন তা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবতা এবং সুবিচারের বিবেচনায় উজ্জ্বল। তাঁর কল্পনা কখনো ধর্মীয় উদারতা, কখনো নারীর স্বাধীনতা, কখনো সামাজিক বৈষম্য, কখনো মানবতা আবার কখনো নৈরাজ্যকে স্পর্শ করেছে। সমাজ বিধানের অসংগতি, স্ববিরোধিতা, জাতিবৈষম্য, শ্রেণি বৈষম্যের প্রতি তাঁর কণ্ঠ সব সময়ই সোচ্চার ছিল। এ সকল কিছুর মূল ছিল মানবমুক্তি ও মানব কল্যাণ ও বৈষম্যহীন সমাজ তৈরি করা।’
দীপক কুমার ঘোষ বলেন, ‘বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী নজরুল বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে উচ্চ আসনে তুলে ধরেছেন। কবি নজরুলের অসাধারণ লেখনী, কবিতা ও গান ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাঙালি জাতিকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। যুগ যুগ ধরে এই কবির সৃষ্টিশীল কর্ম সবাইকে চলার পথে প্রেরণা যুগিয়েছে। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায়ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। তার কবিতা ও গানে এই মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে।কবি নজরুলে চেতনায় তৈরি হোক বৈষম্যহীন সমাজ।