কলমাকান্দায় প্রশাসন ও কৃষকের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
কলমাকান্দা, নেত্রকোনা থেকে গুঞ্জন রেমা
কলমাকান্দা উপজেলার বিআরডিবি হলরুমে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র আয়োজনে “জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশ সুরক্ষায় প্রশাসন ও কৃষকের সাথে মতবিনিময় সভা” অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসাদুজ্জামান, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক তালুকদার, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার মো: সাইফুল ইসলাম, উপজেলা মৎস অফিসার ছিদ্দিকুর রহমান, সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম, উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম খশরু, দৈনিক সমকাল এর প্রতিনিধি শেখ শামীম, ৪টি ইউনিয়নের ভূক্তভূগী কৃষক কৃষাণীবৃন্দ, বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী অহিদুর রহমান ও বারসিক’র অন্যান্য কর্মীবৃন্দ।
মতবিনিময় সভার লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বারসিক এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী অহিদুর রহমান। তিনি কলমাকান্দা উপজেলার বিশেষত সীমান্তবর্তী এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা তুলে ধরার জন্য অংশগ্রহণকারী কৃষক কৃষাণীদেরকে অনুরোধ করেন এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। পর্যায়ক্রমে রংছাতি, খারনৈ, লেঙ্গুরা ও নাজিরপুর ইউনিয়নে যেসব সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে তা তুলে ধরেন সাবিনা রেমা, আব্দুল মালেক, লক্ষী হাজং, ফেরদৌস ওয়াহিদ, বদিন জাম্বিল, কুমকুম নকরেক, আইনুদ্দিন ও আব্দুল মোতালেব। কৃষক কৃষাণীবৃন্দ যেসব সমস্যাসমূহ তুলে ধরেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, চন্দ্রডিঙ্গা গ্রামের পাহাড়ি বালু-পাথর, ছড়া ভরাট ও ভেঙ্গে যাওয়া ব্রীজের সংস্কার, চন্দ্রডিঙ্গা গ্রামের কৃষিকেন্দ্রিক সমস্যা, জাগির পাড়া গ্রামের ছড়া ভরাট ও ঝুঁকিপূর্ণ বসতভিটা ও আবাদী জমি, তেরটোপা গ্রামে আবাদী জমিতে পাহাড়ি বালির সমস্যা/ছড়া/নদী ভাঙ্গন, কচুগড়া, ভাষানকুড়া, আনচেংগ্রী ও পাতলাবন গ্রামে শুষ্ক মৌসুমে সুপেয় পানির সমস্যা, নলছাপ্রা থেকে সেনপাড়া যাওয়ার পথে ভেঙ্গে যাওয়া ব্রীজ সংস্কার, নলছাপ্রা থেকে রানীগাঁও যাওয়ার পথে রাস্তায় ব্রীজ সংস্কার, বালুচড়া থেকে তারানগর গ্রামে সংযোগ ব্রীজ সংস্কারসহ আরও অনেক সমস্যা।
সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে বিদ্যমান সমস্যা সম্পর্কে ইতিপূর্বে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে সংলাপের মাধ্যমে। কৃষক কৃষাণীদের উত্থাপিত সমস্যাগুলো পর্যায়েক্রমে সমাধানের জন্য কাজ করার আশ্বাস প্রদান করেন এবং ৮০০ মিটার চন্দ্রডিঙ্গা ছড়া খনন ও রাস্তা নির্মাণের জন্য এরই মধ্যে একটি প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবনা জমা দিয়েছেন যা সভাপতির বক্তব্যের সময় অংশগ্রহণকারীদের অবহিত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসাদুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সীমান্তবর্তী যেসব গ্রামগুলোতে কৃষি কেন্দ্রিক সমস্যা বিদ্যমান। তার জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কম সেচের ফসল উৎপাদনের জন্য এবং বালু জমিতে ফসল চাষের জন্য সার্বিক সহযোগিতা করবেন।’ তিনি জানান, কলমাকান্দার সীমান্তবর্তী এলাকায় বিভিন্ন কারণে প্রায় ১৭শ’ হেক্টর জমি অনাবাদী আছে যা কৃষি বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাদেরকে অবহিত করেছেন। যেসব জমিগুলো এখন পাহাড়ি বালির ফলে ও সেচের সংকটের কারণে অনাবাদি অবস্থায় পড়ে আছে তা আবাদের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কৃষি বিভাগের উর্ধতন পর্যায় থেকে একটি টিম সরেজমিনে পরিদর্শন করে একটি প্রকল্প গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।