মানিকগঞ্জের সিংজুরি ইউনিয়নের রাস্তাগুলোর উন্নয়ন চান এলাকাবাসী
আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ) ॥
মানিকগঞ্জ ঘিওর উপজেলার সিংজুরি ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই এই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে উপজেলা সদর ও জেলা সদরের সঙ্গে চলাচলের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই। গতকয়েক দিনের বৃষ্টিতে বেড়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ব্রিজের গোড়ায় মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে রাস্তাগুলোর অবস্থা আরও করুণ হয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি এ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, রাস্তাগুলোর খুবই বেহাল ও করুণ দশা। ইউনিয়নের এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার আশপাশেই রয়েছে বৈলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভেড়াডাংঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাইলজুরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাইলজুরি উচ্চ বিদ্যালয়সহ অনেকগুলো কিন্ডার গার্ডেন, মসজিদসহ রয়েছে মাদ্রাসাও। প্রতিদিন এই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ গ্রামের হাজারো মানুষ চলাচল করছে অনুপযোগী এই রাস্তা দিয়ে। চলতে গিয়ে প্রতিদিন কোন না কোন দুর্ঘটনায় শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। ভাঙ্গা রাস্তার দীর্ঘ এই ভোগান্তি থেকে কবে মুক্তি মিলবে সাধারণ মানুষের? কবে দুর্ঘটনামুক্ত সুস্থভাবে যাতায়াত করবে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীসহ গ্রামবাসী? এমন প্রশ্ন কেবল প্রশ্নই থেকেই যায়।
জানা গেছে, এই ইউনিয়নটি উপজেলা সদর থেকে দুর্গম এলাকায় হওয়ায় যুগ যুগ ধরে এলাকাবাসী পাকা রাস্তার অভাবে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত। ইউনিয়নের বালিয়াবাধা বাজার থেকে বেড়াডাংঙ্গা ভায়া শিমুলিয়া তিল্লি ইউনিয়ন শেষ সীমানা প্রায় ৩ কিঃ মিঃ রাস্তা দিয়ে চলাচলরত সিংজুরি, বালিয়াবাঁধা, বাইলজুরি, বৈলতলা, শিহরপুর, আড়িয়াদোহ, দক্ষিণ নাটোয়াবাড়ি, পশ্চিম আটঘড়িয়া, দেবিতেঘড়ি, বেড়াডাংঙ্গা, শিমুলিয়াসহ ১৪টি গ্রামের রাস্তাগুলো কাঁচা হওয়ায় জন সাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভালো যোগাযোগের অভাবে এলাকার কৃষকের উৎপাদিত ফসল ঘোড়ার গাড়িতে বহন করে সময়মতো উপস্থিত হতে না পারায় ফসলের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রাস্তাগুলো পাকাকরণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য, ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, এলজিইডি অফিস ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন নিবেদন করে আসলেও আজ পর্যন্ত কোনো কাজ হয়নি। রাস্তাগুলো দ্রুত পাকাকরণের জন্য এলাকাবাসী জোর দাবি জানিয়েছেন।
বেড়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তজিমুদ্দিন শিকদার জানান, বর্তমান সরকার সারাদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন করলেও আমাদের এলাকা উন্নয়ন হয়নি। সব জায়গায় ডিজিটাল হলেও আমাদের গ্রামে কোন ডিজিটালের ছোয়া লাগেনি। এলাকাবাসী এ দূর্ভোগের পরিত্রাণ চান। সিংজুরি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ মাষ্টার জানান, উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলীকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প তৈরি করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. সাজ্জাকুর রহমান বলেন, “আমরা প্রকল্প তৈরি করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। আশা করছি অতিদ্রুত কার্যকর হবে।”