ঐ দেখা যায় তালগাছ
ভাঙ্গুড়া, পাবনা থেকে মো. মনিরুজ্জামান ফারুক:
ঐ দেখা যায় তালগাছ
ঐ আমাদের গাঁ
ঐ খানেতে বাস করে
কানা বগির ছা …..।
তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে
সব গাছ ছাড়িয়ে
উঁকি মারে আকাশে……. ।
ছোট বেলা থেকেই তাল গাছ নিয়ে লেখা এরকম নানা কবিতা আমরা পাঠ্যপুস্তকে পড়ে আসছি। পরিচিত হচ্ছি লম্বা দেহের অধিকারি বৃক্ষ তালগাছের সাথে। বাংলা সাহিত্যে তালগাছ নিয়ে রয়েছে আরও নানা গল্প, কবিতা।
বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, তাল (Asian Palmyra Palm) একটি ভারতীয় উপমহাদেশীয় গ্রীষ্মকালীন ফল যা তাল গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Borassus flabellifer. তালগাছ পাম গোত্রের অন্যতম দীর্ঘ গাছ যা উচ্চতায় ৩০-৪০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। তালের পাতা পাখার মত ছড়ানো তাই বোরাসাস গণের পামগোত্রীয় গাছগুলিকে একত্রে ফ্যান পাম বলা হয়। একটি তাল গাছ সাধারণত ১শ’ বছর পর্যন্ত জীবিত থাকে।
তালের বীজ ও ফল উভয়ই খাওয়া যায়। তালবীজ বা শাঁস খেতে খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। তাল শাঁস মানুষের শরীরের পানির চাহিদা মেটায়। তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি, আয়রন, পটাসিয়াম, জিংক ও ক্যালসিয়ামসহ নানা খনিজ উপাদান। তালের রস দিয়ে গুড়, মিছরি ও তাড়ি তৈরি করা হয়। পাকা তালের মিষ্টি গন্ধে ভরে ওঠে মন। তালের তৈরি পিঠা পছন্দ করেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহে শীতল পরশ বুলায় তালের হাত পাখা। তালের পাতা দিয়ে ঘরের ছাউনি, পাখা, মাদুর প্রভৃতি তৈরি করা যায়। তাল গাছের কান্ড দিয়ে তৈরি হয় ঘর ও নৌকা ।
বিশেষ করে বজ্রপাত থেকে রক্ষার জন্য তালগাছের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিশেষজ্ঞদের মতে তালগাছ উচু হওয়ায় বজ্রপাত তালগাছের ওপর পরে মানুষের জান মালের রক্ষা করে থাকে। জানা যায়, আগের দিনে বসত বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার ধারে ও ফসলের ক্ষেতে তালগাছ ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বর্তমানে তালগাছ আর তেমন চোখে পড়ে না। বহু উপকারি এ বৃক্ষটির প্রয়োজনীয়তা না ফুরালেও দিন, দিন তা প্রকৃতির মাঝ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের ৯০ বছরের বৃদ্ধ হাজী আবুল হোসেন বলেন, “আগের দিনে এলাকায় অনেক তালগাছ ছিল। তালগাছ বজ্রপাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে”। উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুস্থির চন্দ্র সরকার জানান, “তালগাছ রোপণে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে”।