ঘরে বাইরে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধই দূর করতে পারে নারীর প্রতি সহিংসতা
মানিকগঞ্জ থেকে মো.নজরুল ইসলাম, কমল চন্দ্র দত্ত ও রাশেদা আক্তার
একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রয়োজন নারী ও পুরুষের সমানভাবে কাজ করা। বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের নারীরা পারিবারিক কাজ করেও শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক, সামাজিকসহ বিভিন্ন অঙ্গনে দক্ষতার সাথে কাজ করে চলেছে। কিন্তু সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নিরাপত্তার অভাবে বিভিন্নভাবে নিপীড়িত ও নির্যাতিত হচ্ছে। দিন দিন বেড়েই চলছে পারিবারিক সহিংসতা, নারী ও শিশু ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন উৎপীড়ন-নির্যাতন, এসিড সন্ত্রাস, নারী পাচার, জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি, যৌতুকের বলিসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ। এমনকি মর্গেও নারী নিরাপদ নয়। বাল্যবিবাহ কিছুটা কমে আসলেও তা আশানুরূপ নয়। সর্বোপরি নারী সমাজ দাঁড়িয়ে আছে এক কঠিন সময়ে। এ কঠিন আবর্ত থেকে বেরিয়ে নারীর নিরাপত্তা, সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সারা বিশ্ব একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।
তারই ধারাবাহিকতায় ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ‘কমলা রঙের বিশ্বে নারী, বাধার পথ দিবেই পারি’- এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপন উপলক্ষে বাল্যবিয়ে, নারী ও শিশু নির্যাতন, যৌতুক, যৌন হয়রানি ও নারী পাচারের প্রতিবাদে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গতকাল মানিকগঞ্জ রফিক চত্বরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, জাতীয় মহিলা সংস্থার সহযোগিতায় ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বারসিক, ব্র্যাক, জাগো নারী পল্লী উন্নয়ন সংস্থা, পাসা ও বিলস’র অংশগ্রহণে প্রতিবাদী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে নাসিমা সুলতানার (উপপরিচালক, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, মানিকগঞ্জ) সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মান্যবর জেলা প্রশাসক এস, এম, ফেরদৌস, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইস্রাফিল হোসেন ও জাতীয় মহিলা সংস্থা, মানিকগঞ্জ এর চেয়ারম্যান লক্ষ্মী চ্যাটার্জী এবং সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তারা প্রতিপাদ্যের আলোকে মানিকগঞ্জ জেলাকে উন্নয়ন অগ্রযাত্রার সাথে সাথে পারিবারিক ও সামাজিক সহিংসতা বন্ধ, নারী-শিশু ধর্ষণ ও পাচার রোধ, বাল্যবিয়ে, যৌতুক, মাদকসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যক্রমমুক্ত এলাকা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঘরে বাইরে নিজ নিজ অবস্থান, সাংগঠনিকভাবে ও প্রশাসনিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সেইসাথে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির মাধ্যমে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় কমিটি গঠন ও শক্তিশালীকরণের মধ্য দিয়ে নারীর প্রতি সকল ধরণের নির্যাতন ও সহিংসতা রোধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানানো হয়।