জয়নগর গ্রামের নারীরা ব্যস্ততার মাঝে সময় কাটাচ্ছেন
সাতক্ষীরার, শ্যামনগর থেকে বিশ্বজিৎ মন্ডল
উপকূলীয় সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের নারীরা ব্যস্ততার মাঝে সময় কাটাচ্ছে। বিশেষ করে যেসব পরিবারের নারীরা হাতের কাজের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন তাদের মাঝে। হাতের কাজের প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর থেকে তাদের মাঝে এ ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বারসিক’র ধারাবাহিক কাজের মাধ্যমে জয়নগর কৃষি নারী সংগঠনের নারীরা তাদের আয় বর্ধন কাজকে সমৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের জন্য দর্জি কাজ শেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং বারসিক’র নিকট সহায়তার দাবি জানান। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ২০১৯ সালের প্রথম দিকে জয়নগর কৃষি নারী সংগঠনের উদ্যোগে ও বারসিক’র সহায়তায় দর্জি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রথমত প্রাথমিকভাবে জয়নগর ও গোবিন্দপুর গ্রামের ২৫ জনকে প্রশিক্ষণ সহায়তা করা হয়। আর এ প্রশিক্ষণ প্রদান করেন জয়নগর কৃষি নারী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রোজিনা বেগম। প্রশিক্ষক নিকটে হওয়ায় তারা ভালোভাবে কাজ শিখতে পেরেছেন বলে জানান।
বিগত সময়ে মাঠ পর্যবেক্ষনে তাদের এ ব্যস্ততার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে জয়নগর গ্রামের তাছলিমা, খাদিজা, মিলি, শিক্ষার্থী পিয়ারা ও রীমারা বলেন, ‘আমরা এখানে প্রায় দরিদ্র পরিবারের মানুষ। এখানকার অধিকাংশ পরিবারের পুরুষরা এলাকার বাইরে ভাটার কাজে যান। এলাকায় নারীদের সেই রকম কোন কাজ নেই। বেশিরভার সময়ে আমাদের নারীদের সময়টা কাটতো নানান ভাবে। আর তা হলো টিভি দেখা, গল্প করা,এর বাড়ি তার বাড়ি ঘোরা, সংসারের খুটি নাটি কাজ, মোবাইল দেখা। একই সাথে ২০১৯ সালের দিকে যখন মহামারী করোনার প্রভাব বিস্তার শুরু হয় তখন পরিবারের পুরুষদের কাজ বন্ধ থাকায় আমাদের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছিল্।ো কিন্তু দর্জি প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর থেকে আমরা সময়টা সঠিক কাজে ব্যবহার করতে পারছি।’
তারা আরো বলেন, ‘দর্জি প্রশিক্ষণের পর থেকে আমরা নারীরা বাড়িতে আর বসে থাকিনা। আমরা যারা দর্জি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম তার মধ্যে প্রায় ২২ জন মেশিন ক্রয় করে বাড়িতেই কম বেশি দর্জি কাজ করছি। আগে তো কিছুই হতোনা আর এখন যেমন নিজের পরিবারের জামা কাপড় নিজেরা বানাচ্ছি তেমনি অন্যদের কাজ করছি। আর এ দর্জি কাজ করে আমরা পরিবারের আয়ে ভূমিকা রাখতে পারছি। আমরা নিজেরা যেমন এ কাজ করছি তেমনি বাড়ির মেয়েদেরকেও এই কাজে যুক্ত করছি। তাই আমাদের কাছে এ ধরনের প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এ দর্জি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যদি বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ তৈরি, পার্স তৈরি, আরি-জুরির প্রশিক্ষণ এবং কিছু উপকরণ যেমন শিট কাপড় ও মেশিন সহায়তা পেতাম তাহলেই আরো ভালো হতো। আমরা নারীর এভাবেই সাবলম্বী হতে চাই।’