বারসিক-এ আমার অভিজ্ঞতা
রিনা টুডু, রাজশাহী
আমি রিনা টুডু। আমার গ্রামের নাম মুন্ডুমালা পাচঁন্দর মাহালি পাড়া। আমি ২০২০ সালের ১২ জুলাই বারসিকে কমিউনিটি ফ্যাসিলিটর হিসে কাজ শুরু করি। ছোটবেলা থেকেই গাছকে খুব ভালোবাসি, বিশেষ করে ঔষধি গাছকে খুব ভালোবাসি। আমি যেখানেই যার বাড়িতে ঔষধের গাছ দেখলে সংগ্রহ করে থাকি এবং ঔষধের গাছের উপকার জানার চেষ্টা করে থাকি। আমার বাবা একজন কবিরাজ। ছোটবেলা থেকেই আমার বাবাকে দেখেছি, কেউ অসুস্থ হলে বিভিন্ন ধরনের গাছগাছালির ছাল, বা ফল, শেকড় দিয়ে ঔষধ বানিয়ে দিতেন। আমি যেদিন থেকে বারসিকে কাজ শুরু করি, প্রথমে গ্রামের জনগোষ্ঠীকে গাছের চারা বিতরণ করেছি । বড় গাছের প্রতি আমার আগ্রহ বরাবরই ছিল। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের সবজি গাছের প্রতি আমার এতো আগ্রহ ও বা উপকারিতা সম্পর্কে এতো জানা ছিল না।
বারসিক-এ কাজ না করলে জানতে পারতাম না যে, একটা বীজ দিয়ে ১০০০ মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। আমার জানা ছিল না যে, বাড়ির পাশে পড়ে থাকা ছোট্ট জায়গায় বিভিন্ন সবজি চাষ করলে পরিবারের সবজির চাহিদা পূরণ হয়, নিজে খাওয়া যায়, প্রতিবেশীকে বিনিময় করা যায় এবং পরিবারের আর্থিক অবস্থার পূরণ হয়। এছাড়া বাড়িতে সবজি চাষ করলে বাজার থেকে সবজি কেনা লাগেনা।
তাই আমার কর্ম এলাকায় পড়ে থাকা ছোট্ট জায়গায় বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষের পরামর্শ দিয়ে থাকি। এবং নিজে এখন, আমার বাড়িতে পড়ে থাকা ছোট্ট জায়গায় বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করি। এ সবজি দিয়েই নিজে পরিবার চাহিদা পূরণ করে থাকি, এবং প্রতিবেশীকে বিনিময় করে থাকি।
বারসিক-এ কাজ না করলে, আমি মানুষের সাথে কথা বলা জানতাম না। গ্রাম পর্যায়ে জনগোষ্ঠীর সমস্যা ও সুখ-দুঃখের কথা জানতে পারতাম না। ইউনিয়ন বা পৌরসভার বিভিন্ন স্বনামধন্য মানুষের সাথে কথা বলা জানতাম না। বারসিক আমার জীবন চলার পথের সঈী, বারসিককে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। বারসিক’র মাধ্যমেই আমি আমার এলাকার প্রান্তিক মানুষগুলোর সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, তাদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়েছি এবং বারসিক’র সহায়তার মাধ্যমে তাদের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করি।