সমন্বিত কৃষিতে সফল মাধবী রানী
সাতক্ষীরা থেকে মননজয় মন্ডল
বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ির দেখানো পথেই সাংসারিক কাজের পাশপাশি সমন্বিত কৃষিতে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে সফলতার মুখ দেখেছেন কৃষাণী মাধবী রানী। সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের কৃষাণী মাধবী রানী স্বামী ও শাশুড়ির সহযোগিতায় নিজেদের ২০ শতক বসতভিটায় মৌসুমভিত্তিক বারোমাস বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদন করে চলেছেন। আর উৎপাদিত ফসল নিজেদের সংসারের চাহিদা পূরণের পর অবশিষ্ট অংশ বিক্রয় করে সংসারের কাজে ব্যয় করেন।
এই প্রসঙ্গে মাধবী রানী বলেন, ‘স্বামীর একার উপার্জনে সংসার ভালো চলে না, সন্তানদের খাওয়া দাওয়া লেখাপড়ার খরচ ও সংসারের অন্যন্য খরচের মাত্রা কমানোর জন্য আমি বাড়িতে হাস-মুরগী পালনের পাশাপাশি, নানারকম সবজি চাষ করি। এতে করে আমার তেমন কিছু কেনা লাগে না।’
বাড়ির ব্যবহৃত যাবতীয় ময়লা আবর্জনা, হাস মুরগির বিষ্ঠা, তরকারির অবশিষ্ট অংশ প্রভৃতি গর্তের মধ্যে পচিয়ে সার উৎপাদন ও ব্যবহার করেন। নিজের উৎপাদিত ফসল থেকে উৎকৃষ্টমানের মৌসুমভিত্তিক বীজ সংরক্ষণ করে পরবর্তী সময়ের জন্য। এছাড়াও পাশে একটি ছোট স্বাদু পানির পুকুর থাকাতে সেখান থেকে সবজির ক্ষেতে পরিমাণ মত পানি দিতে পারেন। পানির সেচ ব্যবস্থা সহজতর করার লক্ষ্যে তিনি একটি মটর সহযোগিতা পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমার শতবাড়িকে সুরক্ষা করতে বারসিক থেকে কিছু ঘেরার উপকরণ পাই, যেটা দিয়ে আমার বাগানের চারপাশ ভালোভাবে ঘেরা দিয়েছি। এখন আর ছাগল ভেড়া বাগানের ক্ষতি করতে পারে না।’
স্থায়িত্বশীল কৃষি চর্চায় উক্ত ভূমিকা আমাদের কৃষি ঐতিহ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অনেক খানি গুরুত্বপূর্ণ। স্থায়িত্বশীল কৃষি জীবনকে টিকিয়ে রাখতে হলে মাধবী রানীর মত নারীদের জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতায় অবদানের মূল্যায়নের মাধ্যমে তাদের কাজকে আরো গতিশীল করার জন্য তাদের কাজের সম্মাননা প্রদান করে তার কাজকে ধরে রাখার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া উচিৎ।