নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু করার দাবি

ঢাকা থেকে সাবিনা নাঈম

করোনায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা অভাবে, ঋণে আর সংকটে জর্জরিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন নাগরিক সংলাপে বক্তারা। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বারসিক’র উদ্যোগে ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত সমাজসেবা বিভাগীয় কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আজ (১০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত ‘করোনা দুর্যোগ ও নগরে নি¤œ আয়ের মানুষদের সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো: আব্দুস সোবহান এর সভাপতিত্বে ও পরিবেশ বার্তার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জলের সঞ্চালনায় সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা বিভাগীয় কার্যলয়ের পরিচালক মিনা মাসুদুজ্জামান, অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাপা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক মিহির বিশ্বাস, সমাজসেবা কর্মকর্তা এ কেএম শহীদুজ্জামান, বারসিক’র সহযোগী কর্মসূচী কমকর্তা সুদীপ্তা কর্মকার, নিম্ন আয়ের মানুষের প্রতিনিধি নুরুজ্জামান, আব্দুল কুদ্দুস, রাফেজা বেগম, ঝুমুর বেগম প্রমূখ। অনুষ্ঠানে ধারণাপত্র উত্থাপন করেন বারসিক’র সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘করোনাকালে বস্তিবাসীরা হাজারটা সমস্যার মধ্যে দিনযাপন করে যাচ্ছেন। তাদের আয় নেই, খাবার নেই, চিকিৎসা নেই। সরকার তার মতো করে চেষ্টা করে গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।’ নি¤œ আয়ের মানুষদেরকে আরও গুরুত্ব দিয়ে সরকারের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনায় যুক্ত করার আহবান জানান বক্তারা। সংলাপে বক্তারা আরও বলেন, ‘বেসরকারী তথ্যমতে মোট বস্তিবাসীর সংখ্যা ৪০ লাখের অধিক, যা ঢাকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৭.৪%। এই মানুষগুলো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানাবিধ প্রাকৃতিক আপদ বন্যা, নদীভাঙন, জলাবদ্ধতা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস, খরা, শৈতপ্রবাহ, লবণাক্ততা কারণে জীবিকার তাগিদে গ্রাম ছেড়ে শহরে ভিড় করছেন। ফলে সহজলভ্যতার কারণে তাদের অধিকাংশেরই জায়গা হচ্ছে শহরের অপরিকল্পিত এবং অপরিচ্ছন্ন বস্তিতে ও ফুটপাতের খোলা জায়গায়। তাছাড়াও গ্রাম এবং শহরের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য তাদেরকে শহরে আসতে বাধ্য করছে।’

বক্তারা জানান, ২০২০ সালের আগষ্টের প্রথম সপ্তাহে বারসিক’র গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার কারণে এখন পর্যন্ত ৫০% ভাগ গ্রহকর্মী এখনও তাদের কাজ ফিরে পায়নি। যারা কাজ করছেন, তারা আগে তিনটি বা চারটি কাজ করলেও এখন করছে মাত্র একটি বা দুটি। ফলে শুধু গ্রহকর্মীদের আয় কমেছে ৬৬ ভাগ। যার প্রভাব পড়েছে তাদের খাদ্যাভ্যাসসহ অন্যান্য জীবনযাত্রায় এবং বাকি অন্য বস্তিবাসী মানুষেরা ৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকার ঋণে জর্জরিত।

সংলাপে বক্তারাসহ বস্তিবাসী বিভিন্ন দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সকল নি¤œ আয়ের মানুষদের তাদের স্ব স্ব কাজে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ, নগরের , করোনায় শহরের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সকল ধরণের ভাতার ব্যবস্থা, তাদের সকল ঋণ মওকুফের জন্য ব্যবস্থা ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, পাওয়ার এন্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইন্টিটিউট অব গভনেন্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) তথ্য মতে, করোনাকালে পারিবারিক খরচ চালাতে না পেড়ে ঢাকা শহর ছেড়ে ১৫.৬৪ শতাংশ মানুষ গ্রামে চলে গেছে এবং রিকশা চালকদের আয় কমেছে ৫৩%। এর মধ্যে নগরে সরকারের নগদ সহায়তা পেয়েছেন ১৬% মানুষ।

happy wheels 2

Comments