পৃথিবীটাকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে
মানিকগঞ্জ থেকে রাশেদা আক্তার এবং ঋতু রবি দাস
‘আন্তঃনির্ভরশীলতার সম্পর্ককে স্বীকার করি, বৈচিত্র্যময় বহুত্ববাদী সমাজ গড়ি’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জ শহরস্থ পূর্বমকিমপুর ‘একতা কিশোরী সংগঠন‘র’ উদ্যোগে এবং বারসিক’র সহযোগিতায় বৈচিত্র্য, আন্তঃনির্ভরশীলতা ও বহুত্ববাদী সমাজ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি।
কর্মশালায় সহায়ক হিসেবে ছিলেন বারসিক প্রকল্প কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার, প্রকল্প সহায়ক ঋতু রবি দাস এবং উপস্থিত ছিলেন বারসিক এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়। কর্মশালার শুরুতেই কিশোরীদের জুটি করে একে অপরের পরিচয় দেওয়ার জন্য বলা হয়। তারপর তাদের কাছে কর্মশালার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। পরিচয় পর্ব শেষে তাদের প্রত্যেককে ভিপ কার্ড দেওয়া হয় এবং তাদের এই কর্মশালার মাধ্যমে প্রত্যাশা কী কী জানতে চাওয়া হয়। কর্মশালার বৈচিত্র্য সেশনটা প্রকল্প সহায়ক ঋতু রবি দাস নেন। তিনি বৈচিত্র্যের ধারণা দেন। তিনি বলেন, ‘বৈচিত্র্য মূলত বিভিন্ন কিছুর সমাহার। আমরা প্রকৃতির দিকে তাকালেই দেখতে পারি বৈচিত্র্যের সমাহার। প্রকৃতির সৃষ্টির মাঝে বৈচিত্র্যতার শেষ নেই। মানুষ থেকে শুরু করে পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা সবকিছুর মধ্যে বৈচিত্র্যতা দেখতে পাওয়া যায়। ধান এর বৈচিত্র্যতা, মাছের,খাবারের , ভাষার , সংষ্কৃতির বৈচিত্র্যতা সবকিছুতেই বৈচিত্র্যতা আছে।
প্রকল্প কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার আন্তঃনির্ভরশীলতা এবং বহুত্ববাদী সমাজ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি তুলে ধরেন কিভাবে সৃষ্টির সবকিছুই একে অপরের উপর আন্তঃনির্ভরশীল। আমরা মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব হলেও আমরা জীবনধারণের জন্য প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। আমরা গাছ থেকে অক্সিজেন নিই এবং গাছ আমাদের থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নিয়ে বেঁচে থাকে। মৌমাছি ফুল থেকে মধু নেয়। সবজি খাওয়ার জন্য আমাদের সবজি বিক্রেতার উপর নির্ভরশীল। ধানের জন্য কৃষকের কাছে। বহুত্ববাদী সমাজ যেখানে বিভিন্ন ধর্মের, বয়সের, লিঙ্গের মানুষ, পশুপাখি , কীট পতঙ্গ সবাই থাকবে এবং যার যার বাঁচার অধিকার নিয়ে বাঁচবে। কেউ কারো ক্ষতি করবে না।
বিমল রায় বলেন, ‘পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তুলতে চাইলে সকল ধরনের প্রাণের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। ব্যাঙ, সাপ, পাখি এদের বাঁচার সুযোগ করে দিতে হবে, এদের অভয়ারণ্য ধ্বংস করা যাবেনা। সংগঠনের সভাপতি সামিয়া আক্তার বলেন, ‘আমরা সংগঠনের মধ্যে দিয়ে যে কাজগুলো করতে চাই প্রথমে হয়তো সবাই আমাদের বিভিন্ন ধরনের কথা বলবে। বাজে মন্তব্য করবে, কিন্তু আস্তে আস্তে সবাই বুঝতে পারবে আমাদের সংগঠনের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য ভালো।’
কর্মশালা শেষে কিশোরীদের মাঝে ফলজ বৃক্ষ দেওয়া হয়, এবং সামিয়াদের বাড়িতে বৃক্ষ রোপণ করা হয়।