ফারুকের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প
চাঁপাইনবাবগন্জ জেলা নাচোল থেকে কবির রায়হান রঞ্জু
চাঁপাইনবাবগন্জ জেলার নাচোল উপজেলা কসবা ইউনিয়ন পাইকোড়া গ্রামে বসবাস করেন ফারুক। এক ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী ও মাসহ ৫ সদস্য পরিবার তার। জন্মের পর খাশারহাট গমস্তাপুর উপজেলায় ৪ বছর বয়সে বাবা মাসহ নানার বাড়িতে এসে শুরু করেন বসবাস। মায়ের নামের ৪৮ শতক বাড়িভিটাসহ জমি অংশ সুত্রে আবাদি জমি পান এক বিঘা। শুধু আমন ধান চাষ করে কোনরকম চলে তাঁর সংসার। এসময় অভাব অনটন লেগেই থাকতো।
ফারুক সংসার চালাতে না পারায় ফারুক ১০ বছর পূর্বে এক বোন মাসহ চলে আসেন নিজের বাড়ি খাসার হাটে। পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে শুরু করেন উপার্জন করার। তিনি প্রথমেই ধান চাষের পাশাপাশি রাস্তার ধারের গাছের কুড়াল দিয়ে মুরা তুলে লাকরি বাজারে বক্রি করে চালাতেন সংসার।
২০১৭ সালে বারসিকর সাথে পরিচয় হয় তার। আস্তে আস্তে বিভিন্ন উঠান বৈঠকসহ নানান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। এভাবে চাষবাস সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করে শুরু করেন সবজি চাষ করার। ২০২১ সালে ভার্মি সারের বিভিন্ন গুনাগুণ সম্পর্কে অবহিত হয়ে সালের শেষের দিকে সোহাগ পুষ্টি বাড়ির কেঁচোসার পর্যবেক্ষণ করে নিজেই উদ্বুদ্ধ হয়ে ৬০টি চারিতে শুরু করেন ভার্মি সার উৎপাদন করার।
২০২৩ সালে নুতন করে ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন বৈচিত্রময় ফসল চাষও। তিনি টমেটো, মরিচ, বেগুন, বাঁধাকপি, পেঁয়াজ, ধনে ও সরিষায় ব্যবহার করেন কেঁচো কেঁচো কম্পোস্ট সার। তিনি জানান, গ্রামের অনেক কৃষক আমার ফসল দেখে ভার্মি সারের প্রসংসা করেন। সব মিলে এবছর আমি দেড় থেকে ২ লকাখ টাকা আয় করতে পারবো। তিনি আরও জানান, আমার গ্রামে কখনো কৃষির ডিডি আসেনি। আমার ভার্মি সার থাকার কারণে ডিডিসহ অনেক অফিসার আসেন গ্রামে। আমি এ মৌসুমে কৃষি অফিস থেকে নিজেসহ গ্রামের ২০ জনকে কৃষি উপকরণ পেতে সহায়তা করেছি।