সাম্প্রতিক পোস্ট

শিক্ষার্থী ফরিদা আক্তারের স্বপ্ন

মানিকগঞ্জ থেকে শিবানী চক্রবর্ওী
দশম শ্রেণির শিক্ষাথী ফরিদা আক্তার। বয়স ১৫ বছর। মাতা রোকেয়া বেগম একজন গৃহিণী । পিতা মো ঃ রাজ্জাক মিয়া। পেশায় দর্জি। ফরিদারা তিনÑ ভাইবোন। ছোট ভাই হৃদয় হোসেন নবম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে। বড় বোন লায়লা আক্তার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা চলাকালী সময়ে সংসারের অভাব অনটনের কারণে বিয়ে হয়ে যায়। দুই বোন এক ভাইয়ের মাঝে ফরিদা মেঝ । ফরিদার বাবা ঢাকায় অন্যের দোকানে দর্জি কাজ করতেন। যা বেতন পেতেন তা দিয়ে ফরিদাদের সংসার ভালই চলছিল।


হঠাৎ ফরিদার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাড়ি চলে আসেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর সুস্থ হলে বাজারে একটা দর্জি দোকান দেন। সে দোকান ও ভালোই চলছিল। কিছুদিন কাজ করার পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। এভাবে ফরিদাদের সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয় । ভাই বোনের পড়াশুনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেখা দেয়। ফরিদাদের সংসারই চলেনা আর পড়াশুনা কিভাবে চালাবে?


এর মাঝে ফরিদার পরিচয় হয় বারসিক’র উন্নয়ন কর্মীর সাথে। বারসিক’র উন্নয়ন কর্মীর পড়ামর্শে সে উদ্যোমী নারী সংগঠনের সেক্রেটারি রহিমা বেগমের কাছ থেকে ট্রেনিং নিয়ে নকশী কাঁথা বানানো শুরু করে। নকশী কাঁথা বানানো তার আগ্রহ ছিল। তিনি অল্প সময়ের মাঝেই নকশী কাঁথা বানানো শিখে যায়। তিনি পড়াশুনার পাশাপাশি নকশিকাঁথা বানিয়ে খুব বেশি টাকা পেত না। বেশি লোক তাকে চিনত না। ফরিদার নকশিকাঁথা ভালো বানান এ কথা আস্তে আস্তে সবাই জানতে পারে। এখন ফরিদা আগের চেয়ে বেশি টাকা পান। লেখাপড়ার পাশাপাশি দিনরাত পরিশ্রম করে তিনি নকশী কাঁথা তৈরি করেন। নকশী কাঁথা থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে ফরিদা নিজের পড়াশুনার খরচ চালানোর পাশাপাশি ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে সহায়তা করেন ।


এত কষ্টের মাঝেও ফরিদা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। তাঁর স্বপ্ন শিক্ষক হয়ে গ্রামের অবহেলিত শিশুদের পাশে থাকবেন। তাঁর মত যারা অর্থনীতিক দূরাবস্থায় আছে, অর্থের অভাবে যারা তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পারছেন না তাদেরকে তিনি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিবেন বলে জানান। সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যোগাবে । তিনি একটা দৃষ্টান্ত হবেন সবার মাঝে। নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন এবং অন্যের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সহায়তা করবে ।

happy wheels 2

Comments