অসহায় প্রবীণ ফিরে পেলেন সহায় সম্বল

:: নেত্রকোনা থেকে তোবারক হোসেন খোকন
Untitlecvdনেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় সাংবাদিকদের সহায়তায় বারমারী গ্রামের রমিজ উদ্দীন (৮২) ফিরে পেলেন তাঁর শেষ সহায় সম্বল। সম্প্রতি উত্তর বারমারী গ্রামে পারিবারিক এক সমঝোতার মাধ্যমে এ বিষয়টি নিষ্পন্ন হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রমিজ উদ্দীন দীর্ঘদিন যাবৎ স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন তার বাড়িতে। তাঁর একমাত্র ছেলে আলমাছ মিয়া (২৮) বিয়ে করে বউকে নিয়ে আলাদা বাড়িতে থাকেন। আলমাছ মিয়া মাঝেমধ্যে বাবার খোঁজখবর নিতেন। বৃদ্ধ রমিজ উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী বার্ধক্যজনিত কারণে নানান শারীরিক সমস্যায় ভোগেন। তাঁদের সহায় সম্বল বা জমি-জমার খোঁজ তারা নিতে পারেন না। বিবাহিত ছেলে আলাদা সংসার পাতার কারণে পিতামাতার সম্পত্তির দেখভাল করার কেউ ছিলো না। তাঁদের অসুস্থতা ও দেখভাল করার মানুষের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে রমিজ উদ্দীনের সামান্য জমি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় কৃষক দীর্ঘদিন ধরে জোরপূর্বক দখলকরে চাষবাস করছেন। এতে করে রমিজ উদ্দিনের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

নেত্রকোনার দুর্গাপুর এলাকার সাংবাদিকগণ বারসিক’র আয়োজিত বিভিন্ন কর্মশালায় যোগদান করে প্রবীণদের অধিকার বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন। তারা উপলদ্ধি করেন যে, প্রবীণদের প্রতি তাদেরও দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। এভাবে তারা নানাভাবে প্রবীণদের সেবা করার চেষ্টা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় দুর্গাপুর প্রেসক্লাব‘র কয়েকজন সাংবাদিক পেশাগত কাজে ওই এলাকায় গেলে অসহায় রমিজ উদ্দীনের জমি হারানোর কথাটি জানতে পারেন। তাঁরা রমিজ উদ্দিনের সাথে আলোচনা করে বিস্তারিত জানতে পারে। রমিজ উদ্দিন কান্না জড়িত কন্ঠে তাদেরকে তাঁর অসহায়ত্বের কথাও জানান এবং অনুরোধ করেন তাকে সহযোগিতা করার। এভাবে স্থানীয় ইউ.পি সদস্য শামছুল আলমকে নিয়ে সাংবাদিক নিতাই সাহা, নির্মলেন্দু সরকার বাবুল, মাছুম বিল্লাহ্, ধ্রুব সরকার, সাইদুল ইসলাম উদ্যোগ নেন রমিজ উদ্দিনকে সহযোগিতা করার। তাঁরা এলাকার গণমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে পারিবারিক আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে রমিজ উদ্দিনের জমি ও ভিটেমাটি দখলমুক্ত করেন। এ বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক সাড়া পেয়েছে।

এ বিষয়ে সাংবাদিক সাইদুল বলেন, “গত ২৩ নভেম্বর নেত্রকোনায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর অর্থায়নে হেল্পএইজ এর সহায়তায় সাংবাদিকদের কর্মশালায় অংশ নিয়ে প্রবীণ অধিকার বিষয়ে আমার চোখ খুলে গেছে। কাজেই প্রবীণদের নানাবিধ সমস্যায় সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে নিজ দায়িত্বে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা চেষ্টা করেছি যাতে প্রবীণরা তাদের অধিকার পান।”

এভাবে একটি ক্ষুদ্র উদ্যোগের মাধ্যমে সাংবাদিকরা একজন প্রবীণের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছেন। বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকায় এরকম সচেতন সাংবাদিক ও মানুষ থাকে তাহলে প্রবীণ ব্যক্তিরা কখনো অসহায়ত্বের পরিস্থিতিতে পড়বেন না। আসুন আমরা সবাই প্রবীণদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করি।

happy wheels 2

Comments